তোর কাছ থেকে দূরে , সে কোন্ নিশ্চিন্তিপুরে পালাতে চেয়েছি
প্রতিদিন , বুঝলি মতিন !
হয়তোবা টের পেয়ে অবশেষে নিজেই উধাও হয়ে গেলি
একটি নদীর তীরে মাঠ - ঘেঁষা , গাছ- ঘেরা, জুঁই কি চামেলি
ইত্যাদির ঘ্রাণময় বিজন নিবাসে। আমি তোকে
দীর্ঘ চৌদ্দ বছরের সাইকেডেলিক স্মরণের তীব্র ঝোঁকে
ডাকি মধ্যরাত্রির মতো বুক ছিঁড়ে বারংবার,
প্রতিধ্বনি , শুধু গূঢ় প্রতিধ্বনি ফিরে আসে মগজে আমার ।
কেমন আছিস তুই? এখনো কি ভীষণ অস্থির তুই, ওরে ?
এখনো কি অতি দ্রুত হেঁটে যাস দুঃস্বপ্নের ঘোরে
অলীক অলিন্দে কোনো ? অবাস্তব বন - বাদাড়ে ঘুরিস একা
ছিন্ন বেশ , নগ্নপদ সন্তের মতন? তোর দেখা ,
মানে তোর ঝলমলে প্রকৃত সত্তার দেখা পাবো কি আবার
কোনো দিন ? তোকে হারাবার
পর তুই অতিশয় বেগানা আমার বড়ো বেশি উদাসীন
হয়ে গেলি , রুপান্তরে আমার দুঃখের মতো , বুঝলি মতিন !
যখন এখানে ছিলি, বুকের নিকটে ছিলি, তোর হস্তদ্বয়
আমার স্বপ্নের ঝাড়লন্ঠন বেবাক অতিশয়
হিংস্রতায় বারংবার দিয়েছে দুলিয়ে । চুরমার
হয়েছে এ -ঘরে নিত্য যা কিছু ভঙ্গুর আর প্রগাঢ় সুর্মার
মতো অন্ধকার চোখে নেমে এসেছে আমার ভরদুপুরেই
এখন এখানে নেই , তুই নেই ; আমার বুকের মধ্যে
সবুজ পুকুর।
এইতো সেদিন আমি খাতার পাতায় মগ্ন ছিলাম একাকী
অপরাহ্ণে অক্ষরের গানে তরঙ্গিত। ' সবই ফাঁকি ' ,
কে যেন চেঁচিয়ে বলে । দেখি খুব থম্থমে সমুখে দাঁড়িয়ে
কাল- কিশোরের মতো তুই। যেন দীর্ঘ পথ নিমেষে মাড়িয়ে
এসেছিস ব'লে দিতে আমার উদ্যম সব এলোমেলো ,
দারুণ বেঠিক ।
দিচ্ছিস চক্কর তুই ঘরময় , আমিও ঘুরছি দিগ্বিদিক
জনাকীর্ণ এ - শহরে কে জানে কিসের টানে পরিনামহীন ,
বুঝলি মতিন !
যখন এখানে ছিলি , ছিলো এক ঝাঁক চিলের ক্রন্দন ঘরে ,
ছিলো তীক্ষ্ণ কলরব সকল সময় , মনে পড়ে ।
এখন আমার ঘর অত্যন্ত নীরব , যেন স্লেট , মূক , ভারি ।
কখনো চাইনি আমি নিশ্চুপ ঘর - বাড়ি ।