Friday 16 April 2021

পাঁচ টাকা দূরত্বে তুমি এখন- রুদ্র মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ

উচিত ছিলো তোমার বাড়ি এক্কেবারে
আমার বাড়ির পাশেই হওয়া । জানলা খুলে
চোখ দুটোকে মেলে দিলেই দেখতে পাবো
টুকিটাকি জিনিশপত্র শোবার ঘরে
অলস চুলে বোলাচ্ছ সেই স্নিগ্ধ লাজুক
আঙুলগুলো । উচিত ছিলো জানলা খুললে
তোমার আমার দেখতে পাওয়া সারাটি ক্ষন ।

উচিত ছিলো । উচিত ছিলো রাত্রিবেলা
হাসনুহানার শাড়ির মতো তোমার চুলের
গন্ধচূর্ন আবেশ আবেশ ভেসে আসা,
উচিত ছিলো তোমার গাওয়া আনমনা গান
অসংলগ্ন একটু আধটু শুনতে পাওয়া
সম্পূর্ন অলক্ষিতে । উচিত ছিলো তোমার বাড়ি
এক্কেবারে আমার বাড়ির পাশেই হওয়া ।

উচিত ছিলো শোবার ঘরে শাড়ির বাঁধন
খুলতে গিয়ে আমায় দেখে মুখ লুকানো
লজ্জারাঙা স্নিগ্ধ হাসা আঁচল তলে ।
কিন্তু কপাল তোমার বাড়ি এখান থেকে
সেই কতদূর, পুরোপুরি বিশটি মিনিট
খরচ কোরে পৌঁছতে হয় এবং যেটা
বলতে বাধে তোমার কাছে যেতে হলেই
এই বাজারে পুরোপুরি পাঁচটি টাকা!

০৩.১২.৭৪ (সন্ধ্যা) লালবাগ ঢাকা

Saturday 10 April 2021

অশোকপত্র- পরিতোষ হালদার

স্পর্শ ছাড়া কোনো শব্দ আসে না আর...আয়ু খোলো, হে ঈপ্সিত হরিণ।
প্রতিবেশির চোখে মৌনিরেখা, নীল হয়ে আসে রাত ও অপেক্ষাবেলা।

অতসী গন্ধে কতবার ডুবে গেছে চাঁদ। দূরে জন্মের নামতাগান—
অসংখ্য কন্যাপ্রবাহ...
পুত্র প্রবাহধারা।

প্রতিদিন ভ্রান্তি নামে, ঘুমের ভেতর দোল খায় রাত
অশোকপত্র...
দীর্ঘ ভ্রমণ শেষে তাকিয়ে দেখি—ঘরের মতো বদলে গেছে ঘর।

আমিও যেতে যেতে রোজ সন্ধ্যা বদল করি।
আমার হংস জুড়ে জল, ক্রিয়াময় জোড়া অন্ধকার।

তােতাকাহিনি - বিভাস রায়চৌধুরী

আমিই বলেছিলাম। তুমি হয়তাে খেয়াল করােনি। শরীরের দিকে দিকে এসে গেছে তােমার ফাল্গুন।
তুমি তাকে এইবেলা পাঠিয়েছ চায়ের দোকানে?

টিউশনি শেষে রােজ এককাপ চা-পান করি আমি। তােমাকে ছোঁব না। আমি কামনা করব না কোনােদিন। শুধু চায়ের ধোঁয়ায় মিশে যাক অমেয় ফাল্গুন।
পৃথিবী এখনও জানি প্রতিদিন কবিতাকে চায় জঙ্গলে-জ্যোৎস্নায় আর নােটস দেওয়া পাতায় পাতায়...

কিন্তু পরীক্ষা খারাপ মানেই ছাত্রীরা ছেড়ে যাবে।

আমার বিরহ সহ্য, কিন্তু যদি পয়সার অভাবে
ছােট মেয়ে চুপচাপ না খেয়ে ঘুমিয়ে থাকে? তাই

চায়ের দোকানে বসে মনে মনে কোকিল তাড়াই...