Showing posts with label প্রিয় কবিতা. Show all posts
Showing posts with label প্রিয় কবিতা. Show all posts

Thursday 15 September 2022

Thursday 11 August 2022

Tuesday 21 June 2022

Wednesday 15 June 2022

অনেককেই তো অনেক দিলে–পুর্নেন্দু পত্রী

আমি ছাড়া অনেককেই তো অনেক দিলে।
এর আকাশে ওর আকাশে
ওষ্ঠপুটের অনেক পাখি উড়িয়ে দিলে
পায়রাকে ধান খুটিতে দিলে খোয়াই জুড়ে
বুকের দুটো পর্দাঢাকা জানলা খুলে
কতজনকে হাত-ডোবানো বৃষ্টি দিলে।
কত মুখের রোদের রেখা মুছিয়ে দিলে নীল রুমালে।

আমি ছাড়া অনেককেই তো অনেক দিলে।
চায়ের কাপে মিষ্টি দিলে হাসির থেকে
নকশাকাটা কাঁচের গ্লাসে সরবতে সুখ মিশিয়ে দিলে।

নখের আঁচড় কাটতে দিলে ডালিমবনে
দাঁতের ফাঁকে লাল সুপুরি ভাঙ্গতে দিলে।
আমি ছাড়া অনেককেই তো অনেক দিলে।
একটা জিনিস দাওনি কেবল কাউকে তুমি
আলমারিটার ঝুলন চাবি।

শূন্যতাকে রঙীন করার সাম্পু সাবান
সায়া শাড়ীর ভাঁজের নিচে
একটা ছোটো কৌটো আছে।
তার ভিতরে ভোমরা থাকে।

সে ভোমরাটি সকল জানে
কোন্ হাসিতে রক্ত ঝরে ঠিক অবিকল হাসির মতো
সে ভোমরাটি সকল জানে
কোন রুমালে কান্না এবং কোন আঁচলে বুকের ক্ষত
দেয়ালজুড়ে বিকট ছায়া ভাবছো বুঝি অন্য কারো?
কার ছায়াটি কিরূপ গাঢ় সে ভোমরাটি সকল জানে।

আমায় কিছু লিখতে হবে
লিখতে গেলে ভোমরাটি চাই।
তোমার ঘরের আলমারিটার ঝুলন-চাবি
আমায় দেবে?

পূর্ণিমার মধ্যে মৃত্যু- নির্মলেন্দু গুণ

একদি চাঁদ উঠবে না, সকাল দুপুরগুলো
মৃতচিহ্নে স্থির হয়ে রবে;
একদিন অন্ধকার সারা বেলা প্রিয় বন্ধু হবে,
একদিন সারাদিন সূর্য উঠবে না।

একদি চুল কাটতে যাব না সেলুনে
একদিন নিদ্রাহীন চোখে পড়বে ধুলো।
একদিন কালো চুলগুলো খ'সে যাবে,
কিছুতেই গন্ধরাজ ফুল ফুটবে না।

একদিন জনসংখ্যা কম হবে এ শহরে,
ট্রেনের টিকিট কেটে
একটি মানুষ কাশবনে গ্রামে ফিরবে না।
একদিন পরাজিত হবো।

একদিন কোথাও যাব না, শূন্যস্থানে তুমি
কিম্বা অন্য কেউ বসে থেকে বাড়াবে বয়স।
একদিন তোমাকে শাসন করা অসম্ভব ভেবে
পূর্ণিমার রাত্রে মরে যাব।

একদিন সারাদিন কোথাও যাব না।

যে শহরে তুমি- আপন মাহমুদ

যে কথা তোমাকে বলবার কথা—সে কথা বলি
বিলবোর্ডের সঙ্গে। তুমি এ শহরেই আছো, তবু
তোমাকে দেখি না, বিলবোর্ড দেখি।

যে চিঠি তোমাকে লিখবার কথা, সে চিঠি
লিখি নগরপিতাকে। তুমি এ শহরেই আছো, তবু
তোমাকে দেখি না, খোলা ম্যানহোল দেখি।

যে গান তোমাকে শোনাবার কথা, তোমার
সঙ্গে গাইবার কথা, সে গান গাই অ্যাম্বুলেন্সের সঙ্গে।
তুমি এ শহরেই থাকো, তবু তোমাকে দেখি না,
হাসপাতাল দেখি ।

গান্ধর্ব কবিতাগুচ্ছ ৩৬- শঙ্খ ঘোষ

সব চোখ মেলে দিয়ে এ বাতাসে জড়িয়ে ধরেছ
তুমিই আগুন তুমি জল তুমি আকাশ বা মাটি
শরীরে শিহর তুমি মনে আমরণ আরাধনা
অমৃত পাহাড় থেকে সাগরের তরল গরল।
পুরানো বছরগুলি ফুলের স্তবক নিয়ে প্রায়
পায়ে পায়ে হেঁটে যায় পার্ক স্ট্রিট থেকে গড়িয়ায়
আর তার মুক্তকেশে সোনালি সপ্তর্ষিরেখা রেখে
গভীর প্রান্তরে ঝুঁকে যখন এ ওকে চুমু খায়
তখনই শূন্যের থেকে ঝাঁপ দেয় লক্ষ লক্ষ তারা
তখনই অশথপাতা হাওয়ায় হাওয়ায় মাতোয়ারা
তখনই উৎসের থেকে নেমে আসে প্রলয়ের জল
তখনই গন্ধর্ব তুমি খুলে দাও মাটির আগল
আমার শরীরে তার ছোঁয়া লেগে থাকে অবিরল
আমার শরীরে সেই ছোঁয়া লেগে আছে অবিরল
আমার শরীরে সেই ছোঁয়া লেগে আছে অবিরল

Thursday 31 March 2022

Friday 12 November 2021

আট বছর

ফিরে আসা যায় না তবুও, এতদূরে কেন যায় লোক?
মিলিয়ে যায় তার ধ্বনি, পেরিয়ে যায় তার শোক
ডাক পিওনের সাথে আড়ি, ছবিও হলুদ হয়ে প্রায়
অনেকটা দূরে দেখি কেউ
                                       তোমার মতন হেঁটে যায়...

Thursday 11 November 2021

Monday 11 October 2021

কবিতা হাসান রোবায়েত

*
ধরো, দেখা হলো পথে, অনেক অনেক দিন পর
তোমার রিক্সার পাশে আমার রিক্সার মৃদু গতি
তখন তিলের ফুলে দুপুরের আলো এসে পড়ে
সেদিন তোমার হাত ধরি যদি হবে কোনো ক্ষতি—?
মহিমাগঞ্জের ট্রেনে হেমন্ত কি এসে গেছে মাঠে
আমাদের প্রেম খালি জেনেছিল সারি সারি পাম
তোমাকে ছোঁয়ার পরে ভেবো না কখনো রতিশেষে
জানতে চাইবো আমি তোমার স্বামীর নাম-ধাম—

ভালোবেসে ভুলে যাবে, কাছিমের আয়ু নয় প্রেম
কখনো আমার জন্য ছিল না তোমার মিঠা পানি
এগিয়ে দিলেই গ্লাস করানো হয় না পানি পান
তুমি ছিলে আজীবন সজাগ চতুর সাবধানী—

আমার কবরে যদি কোনো গাছ ছায়া দেয় রোদে
তুমি তাকে কেটে নেবে না ভালো বাসার প্রতিশোধে—

Saturday 9 October 2021

অনুবাদ শায়েরী ২৪

আলোকপ্রদীপ নিভিয়ে, তারা দেখতে যেও না
এই পাগলামিতে আমার ঘর গেছে সেই কবে।
এতখানি বিশ্বাসই বা কোথায় পাবে 'ফারাজ'!
যে অন্য কাউকে ছেড়ে সে শুধুই আমার হবে।

- আহমেদ ফারাজ

Thursday 19 August 2021

মূর্খ- রাণা রায়চৌধুরী

তোমার প্রবল-হাওয়ায়
          আমার ইশারা ভেঙে যাচ্ছে
ছিঁড়ে যাচ্ছে পাল
আমার নৌকো তোমাকে পার হতে পারছে না

তুমি নোনতা, সীমাহীন---
              কূল নেই, কিনারা নেই---
আমার আঙ্গিক তোমাকে চিনতে পারছে না

তুমি শ্রদ্ধা, প্রবল বিদ্যা নিয়ে ঘুরছ
আমি ঝড়ঝাপটায় মূর্খ হয়ে যাচ্ছি
মাঝি আমায় বকাবকি করে
শুনি, চুপ করে থাকি---
        দেখি আমার নৌকো ভাষাবদলের কথা ভাবছে
        দেখি আমার অহং পাশ ফিরে শুচ্ছে

তোমার প্রবল ইঙ্গিত           আমি মূর্খ হয়ে যাচ্ছি

তুমি ঢেউ, আমি অল্পস্বল্প মাঝি

এখনো প্রেমের কাছে ১৬ - শম্ভুনাথ চট্টোপাধ্যায়

আবার কখনো যদি দেখা হয় কোনো দূর জন্মের ওপারে-
একা পথে যেতে ছায়া নির্জন গোধূলি
আলোর বিষাদে আমি তোমার বিষণ্ণ মুখ ঠিক চিনে নেবো,
তোমার চোখের
পাতায় পুরোনো ছবি স্বপ্ন আর স্মৃতিরেখা গভীর কাজল
দেখে আমি চিনে নেবো আমার বিনষ্ট পরিচয়!

যন্ত্রণা পেয়েছি এত, এ জীবনে সীমা তার সমাপ্ত হবে না:
যত দূরে যাব যত আকাশ বঙ্কিম মাঠে ক্রমশ হারাবো,
দিগন্ত-রেখার মতো সেই ব্যথা ক্রমে সরে যাবে চিরকাল
আরও দূর দৃশ্যে, নীলিমায়।
আর সেই প্রসারিত নিঃশব্দ বেদনা
আবার তোমাকে দ্রুত চিনে নিতে পটভূমি হবে।

মা-কে - পঙ্কজ চক্রবর্তী

তুমি আমাকে জ্যোৎস্না রাতে গীতবিতান পড়ে বোঝাতে চেয়েছিলে
শস্যের সম্ভাবনা থেকে বৃষ্টির প্রাক্কথনের কথকতাগুলি
বলেছিলে এভাবে সময়ের সন্ধিভেদে হাত বাড়াবেন তোমার ঈশ্বর
আজ আমি আমার কবিতা পড়ে তোমাকে বলছি
আমার ঈশ্বর বিষাদের কথা, বৃষ্টি নয় লৌহের উপকথা
তুমি চমকে উঠলে এরকম বিপ্রতীপ বার্তায়, বিরক্ত হলে না
কেননা দাড়িওলা সন্ন্যাসীর চেয়ে তুমি আমাকে কম ভালোবাস না
অমঙ্গলে কেঁপে উঠল তোমার বুক; সেই স্পন্দনের আঘাত আমাকে
ছুঁতেই, আমি স্পষ্ট দেখলাম আড়ালে হেসে উঠলেন আমার ঈশ্বর

Saturday 31 July 2021

Saturday 3 July 2021

Friday 16 April 2021

পাঁচ টাকা দূরত্বে তুমি এখন- রুদ্র মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ

উচিত ছিলো তোমার বাড়ি এক্কেবারে
আমার বাড়ির পাশেই হওয়া । জানলা খুলে
চোখ দুটোকে মেলে দিলেই দেখতে পাবো
টুকিটাকি জিনিশপত্র শোবার ঘরে
অলস চুলে বোলাচ্ছ সেই স্নিগ্ধ লাজুক
আঙুলগুলো । উচিত ছিলো জানলা খুললে
তোমার আমার দেখতে পাওয়া সারাটি ক্ষন ।

উচিত ছিলো । উচিত ছিলো রাত্রিবেলা
হাসনুহানার শাড়ির মতো তোমার চুলের
গন্ধচূর্ন আবেশ আবেশ ভেসে আসা,
উচিত ছিলো তোমার গাওয়া আনমনা গান
অসংলগ্ন একটু আধটু শুনতে পাওয়া
সম্পূর্ন অলক্ষিতে । উচিত ছিলো তোমার বাড়ি
এক্কেবারে আমার বাড়ির পাশেই হওয়া ।

উচিত ছিলো শোবার ঘরে শাড়ির বাঁধন
খুলতে গিয়ে আমায় দেখে মুখ লুকানো
লজ্জারাঙা স্নিগ্ধ হাসা আঁচল তলে ।
কিন্তু কপাল তোমার বাড়ি এখান থেকে
সেই কতদূর, পুরোপুরি বিশটি মিনিট
খরচ কোরে পৌঁছতে হয় এবং যেটা
বলতে বাধে তোমার কাছে যেতে হলেই
এই বাজারে পুরোপুরি পাঁচটি টাকা!

০৩.১২.৭৪ (সন্ধ্যা) লালবাগ ঢাকা

Saturday 10 April 2021

অশোকপত্র- পরিতোষ হালদার

স্পর্শ ছাড়া কোনো শব্দ আসে না আর...আয়ু খোলো, হে ঈপ্সিত হরিণ।
প্রতিবেশির চোখে মৌনিরেখা, নীল হয়ে আসে রাত ও অপেক্ষাবেলা।

অতসী গন্ধে কতবার ডুবে গেছে চাঁদ। দূরে জন্মের নামতাগান—
অসংখ্য কন্যাপ্রবাহ...
পুত্র প্রবাহধারা।

প্রতিদিন ভ্রান্তি নামে, ঘুমের ভেতর দোল খায় রাত
অশোকপত্র...
দীর্ঘ ভ্রমণ শেষে তাকিয়ে দেখি—ঘরের মতো বদলে গেছে ঘর।

আমিও যেতে যেতে রোজ সন্ধ্যা বদল করি।
আমার হংস জুড়ে জল, ক্রিয়াময় জোড়া অন্ধকার।