Thursday 19 August 2021

মূর্খ- রাণা রায়চৌধুরী

তোমার প্রবল-হাওয়ায়
          আমার ইশারা ভেঙে যাচ্ছে
ছিঁড়ে যাচ্ছে পাল
আমার নৌকো তোমাকে পার হতে পারছে না

তুমি নোনতা, সীমাহীন---
              কূল নেই, কিনারা নেই---
আমার আঙ্গিক তোমাকে চিনতে পারছে না

তুমি শ্রদ্ধা, প্রবল বিদ্যা নিয়ে ঘুরছ
আমি ঝড়ঝাপটায় মূর্খ হয়ে যাচ্ছি
মাঝি আমায় বকাবকি করে
শুনি, চুপ করে থাকি---
        দেখি আমার নৌকো ভাষাবদলের কথা ভাবছে
        দেখি আমার অহং পাশ ফিরে শুচ্ছে

তোমার প্রবল ইঙ্গিত           আমি মূর্খ হয়ে যাচ্ছি

তুমি ঢেউ, আমি অল্পস্বল্প মাঝি

এখনো প্রেমের কাছে ১৬ - শম্ভুনাথ চট্টোপাধ্যায়

আবার কখনো যদি দেখা হয় কোনো দূর জন্মের ওপারে-
একা পথে যেতে ছায়া নির্জন গোধূলি
আলোর বিষাদে আমি তোমার বিষণ্ণ মুখ ঠিক চিনে নেবো,
তোমার চোখের
পাতায় পুরোনো ছবি স্বপ্ন আর স্মৃতিরেখা গভীর কাজল
দেখে আমি চিনে নেবো আমার বিনষ্ট পরিচয়!

যন্ত্রণা পেয়েছি এত, এ জীবনে সীমা তার সমাপ্ত হবে না:
যত দূরে যাব যত আকাশ বঙ্কিম মাঠে ক্রমশ হারাবো,
দিগন্ত-রেখার মতো সেই ব্যথা ক্রমে সরে যাবে চিরকাল
আরও দূর দৃশ্যে, নীলিমায়।
আর সেই প্রসারিত নিঃশব্দ বেদনা
আবার তোমাকে দ্রুত চিনে নিতে পটভূমি হবে।

মা-কে - পঙ্কজ চক্রবর্তী

তুমি আমাকে জ্যোৎস্না রাতে গীতবিতান পড়ে বোঝাতে চেয়েছিলে
শস্যের সম্ভাবনা থেকে বৃষ্টির প্রাক্কথনের কথকতাগুলি
বলেছিলে এভাবে সময়ের সন্ধিভেদে হাত বাড়াবেন তোমার ঈশ্বর
আজ আমি আমার কবিতা পড়ে তোমাকে বলছি
আমার ঈশ্বর বিষাদের কথা, বৃষ্টি নয় লৌহের উপকথা
তুমি চমকে উঠলে এরকম বিপ্রতীপ বার্তায়, বিরক্ত হলে না
কেননা দাড়িওলা সন্ন্যাসীর চেয়ে তুমি আমাকে কম ভালোবাস না
অমঙ্গলে কেঁপে উঠল তোমার বুক; সেই স্পন্দনের আঘাত আমাকে
ছুঁতেই, আমি স্পষ্ট দেখলাম আড়ালে হেসে উঠলেন আমার ঈশ্বর