Sunday 5 March 2017

Tuesday 28 February 2017

পালটে যাচ্ছে ভেতর বাড়ি --
পালটে যাচ্ছে চোখ--
তোমার ঘ্রানে বসাচ্ছে ভাগ-
অন্য কোন লোক।

- সৌমেন অনন্ত

Wednesday 22 February 2017

যে ভাবে বাঁচি

কখনো অকৃত্রিম ভাবে তুমুল হাসি,
তুখোড় রসিকতায় আশে পাশের
মানুষগুলোকেও শামিল করি হাসির মিছিলে।
.
কখনোবা হাসি-কান্না,
সুখ-দুঃখের মাঝামাঝি জায়গায় থেকে
নিঃশ্বাস আটকে নির্লিপ্ত মুখে
খাবার গিলি, ঘুমোই
সম্পন্ন করি দৈনন্দিন প্রতিটি কাজ।
.
অসহ্য যন্ত্রণার শেষ সীমায় পৌঁছে গেলে
আগল খুলে কাঁদি খুব,
টকটকে লাল চোখ
ব্যথায় বন্ধ না হয়ে আসা অব্দি।
কাঁদতে কাঁদতে উদভ্রান্তের মত হাসি ফের...
.
কিন্তু আমি কারো কাছে যাইনা
নাম ধরে ডাকি না কারো...
চেতনে অবচেতনে দগ্ধ হই শুধু,
তবু শীতলতা খুঁজিনা কোথাও।
জমে বরফ হয়ে গেলেও,
উষ্ণতা চাইনি অন্য কারো কাছে।

Tuesday 21 February 2017

Tuesday 14 February 2017

বন পলাশের মত-আরণ্যক বসু

ভালবাসা মানে সকালের ট্রেনে ওঠা
ভালবাসা মানে জানালার ধারে সিট
ভালবাসা মানে অপরিচিতের হাসি
ভালবাসা মানে সম্পর্কের ভিত

কাছে থাকবার অন্তবিহীন ছল
দূরে হারালেই ডুবুরির মত খোঁজা
হাতের ছোঁয়ায় বিন্দু চোখের জলে
ভালবাসা মানে একে অপরকে বোঝা

কতবার হল অকারণে ছাড়াছাড়ি
তবুও মাটিতে দুজনের ঘরদোর
তুমি কাছে নেই কিন্তু তোমার কাছে
ভালবাসা কাঁদে বৃষ্টির রাত ভোর

আবার ভাসব বসন্তে বর্ষায়
তোমার শাড়িতে লোটাবে বৃষ্টিফোঁটা
কমলা আলোয় খেলা ভাঙবার খেলায়
দুজনে দেখব আগামী সূর্য ওঠা

কথাগুলো সব সারারাত ঘুমহীন
কথাগুলো চুপ আলো ফোটবার আগে
আকাশের নীচে বন পলাশের মত
ভালবাসা একা শত শতাব্দী জাগে

Monday 13 February 2017

বিয়ে হচ্ছে এমন এক নিষ্ঠুর রসিকতা

বিয়ে হচ্ছে এমন এক নিষ্ঠুর রসিকতা, যা কোন একজনের কাছ থেকে,
বিশেষ কারো প্রতি থাকা সামান্য পরিমাণ অধিকারটুকুও,
সারাজীবনের জন্য কেড়ে নেবে,
আর কাউকে কিনা সেই "কারো" ওপরেই একেবারে সমস্তটা অধিকার দিয়ে দেবে।

প্রথম জন হৃদয়ের খুব কাছাকাছি ছিল,
কিন্তু দ্বিতীয়জন হয়ত সারাটা জীবনে, শুধুমাত্র শরীরের কাছেই যেতে পারবে।

Friday 10 February 2017

মনে থাকবে?-আরণ্যক বসু

পরের জন্মে বয়স যখন ষোলোই সঠিক
আমরা তখন প্রেমে পড়বো
মনে থাকবে?

বুকের মধ্যে মস্ত বড় ছাদ থাকবে
শীতলপাটি বিছিয়ে দেব;
সন্ধে হলে বসবো দু'জন।
একটা দুটো খসবে তারা
হঠাৎ তোমার চোখের পাতায় তারার চোখের জল গড়াবে,
কান্ত কবির গান গাইবে
তখন আমি চুপটি ক'রে দু'চোখ ভ'রে থাকবো চেয়ে...
মনে থাকবে?

এই জন্মের দূরত্বটা পরের জন্মে চুকিয়ে দেব
এই জন্মের চুলের গন্ধ পরের জন্মে থাকে যেন
এই জন্মের মাতাল চাওয়া পরের জন্মে থাকে যেন
মনে থাকবে?
আমি হবো উড়নচন্ডি
এবং খানিক উস্কোখুস্কো
এই জন্মের পারিপাট্য সবার আগে ঘুচিয়ে দেব
তুমি কাঁদলে গভীর সুখে
এক নিমেষে সবটুকু জল শুষে নেব
মনে থাকবে?

পরের জন্মে কবি হবো
তোমায় নিয়ে হাজারখানেক গান বাঁধবো।
তোমার অমন ওষ্ঠ নিয়ে,
নাকছাবি আর নূপুর নিয়ে
গান বানিয়ে__
মেলায় মেলায় বাউল হয়ে ঘুরে বেড়াবো...
মনে থাকবে?

আর যা কিছু হই বা না হই
পরের জন্মে তিতাস হবো
দোল মঞ্চের আবীর হবো
শিউলিতলার দুর্বো হবো
শরৎকালের আকাশ দেখার__
অনন্তনীল সকাল হবো;
এসব কিছু হই বা না হই
তোমার প্রথম পুরুষ হবো
মনে থাকবে?

পরের জন্মে তুমিও হবে
নীল পাহাড়ের পাগলা-ঝোরা
গায়ের পোষাক ছুড়ে ফেলে
তৃপ্ত আমার অবগাহন।
সারা শরীর ভ'রে তোমার হীরকচূর্ণ ভালোবাসা।
তোমার জলধারা আমার
অহংকারকে ছিনিয়ে নিল।

আমার অনেক কথা ছিল
এ জন্মে তা যায়না বলা
বুকে অনেক শব্দ ছিল__
সাজিয়ে গুছিয়ে তবুও ঠিক
কাব্য করে বলা গেল না!
এ জন্ম তো কেটেই গেল
অসম্ভবের অসঙ্গতে
পরের জন্মে মানুষ হবো
তোমার ভালোবাসা পেলে
মানুষ হবোই মিলিয়ে নিও!

পরের জন্মে তোমায় নিয়ে...
বলতে ভীষণ লজ্জা করছে
ভীষণ ভীষণ লজ্জা করছে
পরের জন্মে তোমায় নিয়ে...

অপেক্ষা ঋতুর জন্য

আমি একটি গ্রীষ্মের অপেক্ষায় থাকি
যে গ্রীষ্মের সবটুকু রোদ কেবল আমায় দহন করবে
আমি পুড়ে ছাই হয়ে যাব

আমি অপেক্ষায় থাকি একটি বর্ষার
যার সকল বৃষ্টিবিন্দু
কেবল আমায় সিক্ত করবে
প্রবল বর্ষণে আমি ভেসে যাব

একটি শরতের অপেক্ষায়ও আমি থাকি
যার সকল শুভ্র স্নিগ্ধ মেঘ
শুধু আমার জন্য পুঞ্জীভূত হবে
আগামী বর্ষার বৃষ্টি হবার অপেক্ষায়

হেমন্তের জন্যে আমার আকুলতা নেই
কিন্তু একটি শীতের অপেক্ষায় আমি থাকি
যার সকল কুয়াশা ঝাপসা করে দেবে আমার চোখ
আর কপোলে ঝরে পড়বে
মুক্তো কণার মত অজস্র শিশির বিন্দু হয়ে

অতঃপর আমি একটি বসন্তের অপেক্ষায় থাকি
যে বসন্তের সব ফুল প্রস্ফুটিত হবে
শুধু আমারই জন্যে
আর সকল সৌরভ কেবলই আমার হবে

একা থাকলে আমার যতটা একা একা লাগে, তার চেয়ে অনেক বেশী একা লাগে অনেক মানুষের মধ্যে থাকলে...
কষ্টও হয় কয়েকগুণ বেশী।

অনেকের মধ্যে থাকলেই আমি টের পাই
এত এত মানুষ কিন্তু আমার কেউ না। মানুষের ভিড়ে গেলেই ভেতরটায় প্রচন্ড ফাঁকা ফাঁকা লাগতে থাকে। এই জন্যই আমি মানুষ এড়াই, মানুষ ভয় পাই ।

বোধ-পূর্ণেন্দু পত্রী

আমাকে ছুঁয়েছো তুমি
শরীর পেয়েছে প্রিয় রোদ
আমার যা কিছু ভেসে গিয়েছিল
কুয়াশার পারে
সব ফিরে পেয়ে যাব এই তৃপ্তিবোধ
আমাকে করেছে নীল পাখি।

ইচ্ছের দরোজায়-রুদ্র মুহাম্মদ

সব কথা শেষ হলে ফিরে যাবো,
একটি চোখ রেখে যাব শিথানের জানালায়
সব কথা শেষ হলে করাঘাত জাগাবে তোমায়
তুমি এসে খুলবে দুয়ার- দ্যাখা হবে না

প্রেম ভালবাসার দুএক টুকরো-ভাষ্কর চক্রবর্তী

তুমি যে আমার সংগে থাকলে না শেষ পর্যন্ত
সে জন্যে আমি দুঃখিত নই
আমি এখন বৃষ্টির ভাষা বুজতে পারি
রাত্রিবেলার ভাষা বুঝতে পারি
আমি নিজের ভাষায় শান্তভাবে
কাঁদতে পারি এখন

নেই কেন সেই পাখি_নির্মলেন্দু গুণ

দুঃখ সে নয় শুধুই আমার একার,
তোমারও কিছু অংশ আছে তাতে ।
নিবিড়ঘন ব্যথার পাশাপাশি,
তুমিও মিশে আছো আমার সাথে ।
দুঃখ সেও নেশার মতো লাগে
যদি ওটা তোমার দেওয়া হয়,
অন্য যতো দুখের কথা জানি
তার কিছুই চাওয়ার মত নয় ।
তুমি আমার ভিতর বাড়ি চেনো
তাই সহজে প্রবেশ করো মূলে,
যারা আসে সুখের স্মৃতি হতে;
হারায় তারা পথের হুলুস্হুলে।