অজস্র জন্ম ধ'রে আমি তোমার দিকে আসছি; কিন্তু পৌঁছোতে পারছি না।
তোমার দিকে আসতে আসতে আমার এক-একটি দীর্ঘ জীবন
ক্ষয় হয়ে যায় পাঁচ পয়সার মোমবাতির মতো।
আমার প্রথম জন্মটা কেটে গিয়েছিলো শুধু তোমার স্বপ্ন দেখে দেখে।
এক জন্ম আমি শুধু তোমার স্বপ্ন দেখেছি।
আমার দুঃখ তোমার স্বপ্ন দেখার জন্যে আমি মাত্র একটি জন্ম পেয়েছিলাম।
আরেক জন্মে আমি ঘর ছেড়ে বেরিয়ে পড়েছিলাম তোমার উদ্দেশে।
পথে বেরিয়েই আমি পলিমাটির ওপর আঁকা দেখি তোমার পায়ের দাগ।
তার প্রতিটি রেখা আমাকে পাগল ক'রে তোলে।
ওই আলতার দাগ আমার চোখ আর বুক আর স্বপ্নকে এতো লাল ক'রে তোলে
যে আমি তোমাকে সম্পূর্ণ ভুলে যাই। ওই রঙিন পায়ের দাগ
প্রদক্ষিণ করতে করতে আমার ওই জন্মটা কেটে যায়।
আমার দুঃখ মাত্র একটি জন্ম পেয়েছিলাম সুন্দরকে প্রদক্ষিণ করার।
আরেক জন্মে তোমার কথা ভাবতেই আমার বুকের ভেতর থেকে
সবচেয়ে দীর্ঘ আর কোমল আর ঠান্ডা নদীর মতো কী যেনো প্রবাহিত হ'তে
শুরু করে। সেই দীর্ঘশ্বাসে তুমি কেঁপে উঠতে পারো ভেবে আমি
একটা মর্মান্তিক দীর্ঘশ্বাস বুকে চেপে কাটিয়ে দিই সম্পূর্ণ জন্মটা।
আমার দুঃখ আমার কোমলতম দীর্ঘশ্বাসটি ছিলো মাত্র এক জন্মের সমান দীর্ঘ।
আমার ষোড়শ জন্মে একটি গোলাপ আমার পথরোধ করে।
আমি গোলাপের সিঁড়ি বেয়ে তোমার দিকে উঠতে থাকি--উঁচুতে--উঁচুতে,
আরো উঁচুতে--; আর এক সময় ঝ'রে যাই চৈত্রের বাতাসে।
আমার দুঃখ মাত্র একটি জন্ম আমি গোলাপের পাপড়ি হয়ে তোমার উদ্দেশে
ছড়িয়ে পড়তে পেরেছিলাম।
এখন আমার সমস্ত পথ জুড়ে টলমল করছে একটি অশ্রুবিন্দু।
ওই অশ্রুবিন্দু পেরিয়ে এ-জন্মে হয়তো আমি তোমার কাছে পৌঁছোতে পারবো না।
কেনো পৌছোবো? তাহলে আগামী জন্মগুলো আমি কার দিকে আসবো?
0 comments:
Post a Comment