Sunday, 26 July 2020

বোকা মানুষের চিঠি ৪- জয়াশিস ঘোষ

শহরে উদাসী হাওয়া।  মনের ভেতর শিরশির কত কী বলেছে কানে, প্রেমিকেরা জন্মবধির তোমার চোখের নীচে অসংখ্য কবিতার বাস স্নান সেরে কাছে আসো আমার বিষাদবিলাস যতবার কাছে যাই তোমাকে নতুন করে দেখি এমন হাসির কাছে পৃথিবীর সব সুখ মেকী রুক্ষ শীতের রাতে দরজায় বেঁধে নাও খিল জেনেছ কার নামে বেজেছে গোপনীয় তিল? একটু আগুন...

অবৈধ- অরণি বসু

আমার জন্যে নয়, ওই মোমবাতি জ্বলেছিল অন্য কারও জন্যে আমি ঘটনাচক্রে তার কাছাকাছি এসে উত্তাপ নিয়েছি। আমার জন্যে নয়, ওই মোমবাতি জ্বলেছিল অন্য কারও জন্যে আমি সন্তর্পণে আমার মুখে তার আলো মাখিয়ে নিয়েছি...

টুকরো জয়াশিস

*তাকে দায়সারা ভাবিনি কখনও শুধু শেকলে বেঁধেছি তার দায় স্পর্শ ছিঁড়ে গেলে কতটা অসুখ বোঝা যায়! *বহুকাল কথা নেই। অস্ফুটে  গলে গেছে মোমও যাকে তুমি ভালোবাসো, তার কাছে ভেঙেছ কখনও? *আমাদের কথা নেই। আমাদের কথারা ভেসেছে এ শহরে ভেজে তারা, যারা একবার ভালোবেসেছে *নিছক কাঁচের টিপ। টেবিলে ছড়ানো থোকা স্মৃতি বৃষ্টি...

সন্ধ্যে- জয়াশিস ঘোষ

এ মেঘেরও নিজস্ব দিন ছিল আগে তোমায় বলিনি চুল খুলে নাচলে অপার্থিব হয়ে যাও গোপনে সারস দেখেছি, মরালগ্রীবাটি পায়ের নূপুর খুলে বলেছিলে 'কেন একটুও যত্ন কর না নিজের?' এ মেঘ নিজের স্বপ্ন থেকে ঝরে যাবে ঘুমের ছাঁটে বন্ধ করে দেবে জানালা বিষণ্ণতায় আলো খুঁজে দেবে                                                         ...

মেঘমল্লার- জয়াশিস ঘোষ

তুমি তখন অল্পদিনই। নতুন বন্ধু। প্রস্তাবে না হরিণচোখের ভেতর কেমন ছলছলেভাব চাঁদের মতন ঘুম আসেনি। আমি ছিলাম বিষাদপ্রেমী। ঘামে নরম হাত বাড়ালাম, বন্ধু হবে? দেখেছিলাম বৃষ্টিদানা। অচেনা লোক। কয়েকটা দিন ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট ঝুলেই ছিল নাগরদোলায়। রবীন্দ্রনাথ মুচকি হাসেন। কালবোশেখী আমি তোমার চুলের ফাঁকে দারুচিনির...

বোকা মানুষের চিঠি ১৫- জয়াশিস ঘোষ

একদিন বেখেয়ালে  তাকাবে আমার দিকে যদিও তোমার চোখের সামনে সাধারণ পালকের মত পড়ে আছি যে পাখির, সে ভুলেও গেছে একদিন ঘর না পাওয়া চিঠি , নামহীন তুমি তুলে নেবে। গুঁজে নেবে চুলে একদিন এই খয়েরি মফস্বলের সমস্ত ভুলে প্রলেপ দেবে তুঁতে সালোয়ার সেদিন যদি দুনিয়ার ভিড় থেকে আলাদা করে আমার চোখ পড়ে নিতে পারো দেখবে...

খাদ- জয়াশিস ঘোষ

মনের ভেতর জ্যোৎস্না আসে, চুল খুলেছ অকস্মাৎ পাহাড় থেকে গড়ায় কথা। পা বাড়ালেই গভীর খাদ তোমার হাতে রাগ তুলে দিই, এক ফুরালে অন্য দি কেউ বলেনি মধ্যরাতে আজ পৃথিবীর জন্ম দিন এসব সবই স্বপ্নে পাওয়া পিছলে যাওয়ার উপাখ্যান যাওয়ার দিনের বৃষ্টি, আদর, কান্না, আঘাত, শব্দ, গান যে বা যারা বাসের খোঁজে একলা বসে, বাড়ছে স্রোত তোমার...

ঝাঁপ- স্মরণজিৎ চক্রবর্তী

বহুদূরে যেন কুয়াশা পড়েছে আজ মাফলার এসে জড়িয়ে ধরেছে ঘুম কলকাতা জুড়ে বৃষ্টি নামবে ঠিক তোমার মনেও বকুলের মরশুম সেই দেখে আমি ঝড় জলে একাকার মানি ব্যাগে রাখি কুচি পাতাদের ঘাম তুমি কি কোথাও ট্রাম থেকে নেমে গেলে? আমিও নরকে সারারাত নামলাম শুধু রয়ে গেল আলতো পিপারমিন্ট ঠোঁট জুড়ে বাজে সন্ধের এপ্রিল এলো হাওয়া...

প্রেমিকজনের চিঠি- শ্রীজাত

আছি, কিন্তু নেই এখানে । স্থবির, কিন্তু খরস্রোতা । আমার কাছে জীবন মানে উইন্ডস্ক্রিনে বৃষ্টিফোঁটা । চার দশকের চৌকাঠে দিন রোদ্দুরও নেই তেমন বিশেষ মুঠোই কেবল একটু জেদি । কে জানে হার মানবে কিসে ... তারই মধ্যে এসে দাঁড়াও ফের সমস্ত ওলটপালট সন্ধে চেনে আমার পাড়াও । এবারে রাত নামলে ভাল । শান্ত আছি। শান্ত থাকি। কিন্তু...

আর তো কেউ পারে না

তুমিই সবচেয়ে সুন্দর। উপন্যাসের নায়িকার মত। সাবলীল, গভীর, যত্নে গড়া অবহেলার পাহাড়। মায়া ছড়িয়ে কেমন প্রতিশোধ নিতে পার। আর তো কেউ পারে না। পারবে না। - খালেদ শফিউল্ল...

দেখা হবে- প্রমোদ বসু

দেখা হবে অন্যমনস্কতায়! যদি হাত রাখো, যদি বলো বাড়ির কাহিনী, যদি লজ্জানত মুখে ফোটে অতীতের ধ্বনি, যদি সন্ধ্যামনি গন্ধ দেয় চুলে, দেখা হবে ভুল পথে, হাতে-হাত, আঙুলে-আঙুলে! যেতে যেতে বৃষ্টি হবে ফুলহীন গাছের ভঙ্গীতে, শব্দ খুঁজে নেবে ছবি---শব্দের সঙ্গীকে; কেবল দু'জন শুধু আরো দূর অন্যমনস্কতায় চলে যাবো। দেখা হবে...

সংসার- অরণি বসু

যখনই তোমার কাছে আসি হাসতে হাসতে গড়িয়ে দিই নিজেকে মজার মজার কথা বলি আর খুব সন্তর্পণে থাকি আর নিজেকে উজাড় করে দিতে দিতে লুকিয়ে রাখি চিকচিকে চোখের কোণ, অন্ধ শ্রাবণ আর ব্যক্তিগত পাগলঝোর...

সকাল- অরণি বসু

ছুরির ফলা থেকে যেন নেমে এসেছে এইমাত্র এত দীপ্র, দুহাত ছড়ানো তোমার হাসি আমাকে এক অচেনা সমুদ্রসৈকতে এনে ফেলে। শরীর পুড়িয়ে দেওয়া তাপ, মন পুড়িয়ে দেওয়া খবর সব তুচ্ছ মনে হয়। মনে হয়, আরেকবার বেজে উঠি, আরেকবার ছুঁয়ে যাক সেতারের অলীক মূর্ছনা। অনেক মনখারাপের অলিগলি পেরিয়ে একটা সকাল আজ উদ্ভাসিত হয়ে উঠল তোমার...

আর যদি নাই আসো- বিনয় মজুমদার

আর যদি নাই আসো,ফুটন্ত জলের নভোচারী বাষ্পের সহিত যদি বাতাসের মতো না-ই মেশো, সেও এক অভিজ্ঞতা ; অগণন কুসুমের দেশে নীল বা নীলাভবর্ণ গোলাপের অভাবের মতো তোমার অভাব বুঝি ; কে জানে হয়তো অবশেষে বিগলিত হতে পারো ; আশ্চর্য দর্শনবহু আছে নিজের চুলের মৃদু ঘ্রাণের মতন তোমাকেও হয়তো পাইনা আমি, পূর্ণিমার তিথিতেও দেখি অস্ফুট...