Thursday 2 April 2020

টুকরো সৃজা

* ব্যাখ্যা করে ক্লান্ত। ফলে বলব না আর খুলে-
কেন তুমিই রইলে আমার দুঃখ পাওয়ার মূলে                                    

*তোমার ইচ্ছে নেই। আমারও ভরসা নেই জোরে...
তাই একা ভালবাসি; পুড়ে যাই ভেতরে ভেতরে

* যেসব কান্না আজও বৃষ্টিতে ঢাকে,
সেই অসহায়তায় রেখেছি তোমাকে।

*হাসলে যে ফুলঝুরি, তার চোখই মাঝরাতে লাল
বাইরে দেখতে সুখী, ভেতরে ব্যথার কঙ্কাল...

* থাকার যে লোক, এমনি থাকে। ফেরার মানুষ ফেরে
কি লাভ হবে বল তো দেখি- রোজ নিজেকে মেরে?

*ব্যাখা করা অদরকারী। বোঝার মানুষ হলে,
চোখের দিকে তাকিয়ে সে লোক সবটা দেবে বলে...

* বেশ তো আছি। হাসির আওয়াজ যাচ্ছে কানে শোনা?
ঠিক কতটা কষ্ট পেলাম- তোমাকে বলব না।

* অথচ তোমায় আজও ভালবাসি আমি
এত সব ব্যথা, এত সব ভিড় ঠেলে!
ঘুমের মধ্যে এখনো স্বপ্ন দেখি-
আমার কান্না দেখে তুমি ফিরে এলে...
চোখের সামনে এখনো সবটা দেখি-
তুমি যাচ্ছিলে, ছেড়ে চলে যাচ্ছিলে।

*গা পুড়ে যায় পুড়ুক তবু ছাই হবো না মোটে
জ্বরের ঠোঁটে এসব দিনে নতুন প্রলাপ ফোটে
বাড়াবাড়ি করবে পারদ, পেরিয়ে যাবে ঘর
তোমার চোখে রাগ দেখেছি। ছোঁয়াতে ঈশ্বর... ❣

*আজও অসুখিনী পায়ে পায়ে হাঁটে, পেরোতে পারেনা পথও
নিজের ব্যথাতে ওষুধ না দিয়ে, ঢাকে অন্যের ক্ষত।
ভালবাসলেই হবে সে মায়ের মত।

* পালিয়ে যাবার অনেক উপায়, সব কি সবাই শেখে?
কেউ ধার নেয় স্বেচ্ছামরণ, কেউ কবিতা লেখে।

* মুচকি হেসে তাকিয়ে থাকে এবং বেড়ায় দৌড়ে
উদ্ধত মেয়ে বাইরে কঠিন, ভেতরে আটপৌরে

* সব্বাই ছেড়ে দেবে একা, একাই তো ঝড় সামলাবো...
শুধু খুব ভয় পেয়ে গেলে, মাঝরাতে তোর কাছে যাব।

* কিছুটা দেখতে পাই, বাকিটা ঝাপসা হয়ে থাকে
হঠাৎ কান্না পেলে চশমাটি বাঁচায় আমাকে।

*ভালবাসা ফিরে যায়, থাকে মায়াটাই
তোমাকে বাঁচাই আর নিজে মরে যাই।

* ব্যথার ওপর ছেটাচ্ছি বিষ, ক্ষতর ওপর নুন প্রলেপ
মরার চেয়েও অনেক কঠিন মরতে চাওয়ার পদক্ষেপ।

* লুকিয়ে রেখে লাভ কি হবে? তার চেয়ে আনো কাছে...
আমার ব্যথায় এখন শুধুই ক্লান্তি জমে আছে।
যন্ত্রণাকে জড়িয়ে ধরি, দুঃখ প্রিয়জন।
আমার কি স্রেফ ঘর গিয়েছে? মন ভেঙেছে, মন...

* মান অভিমান ঝগড়া হবার পরেও
যার কাছে ঠিক ফিরতে পারে মন,
ঝড় ঝাপটা পেরিয়ে ওঠা চোখের
তার মতো এক বন্ধু প্রয়োজন।

 *তুমিও যেদিন ক্লান্ত হবে আর হারাবে খেই,
বুঝবে- কেন ভাঙা মনের সুযোগ নিতে নেই
না শুকোনো কারোর ঘায়ে আঘাত দিতে নেই
জড়িয়ে নিতে না শিখলেও, পুড়িয়ে দিতে নেই...
কষ্ট দিতে নেই গো। এমন কষ্ট... দিতে নেই।
একটা দুটো মিথ্যে বলি, মিথ্যে বলা ভালো।
আমার ঘরে সুখ ছাপোষা, দুঃখেরা জমকালো...
তাই কান্না গিলে মিথ্যা বলাই ভালো।

*এত ভাল হও যে আঘাতদায়ীও লজ্জা পাক, এত আলো হও যে বিশ্বাসঘাতকেরও মাথা নীচু হয়ে আসুক।

*একটা দুটো মিথ্যে বলি, মিথ্যে বলা ভালো।
আমার ঘরে সুখ ছাপোষা, দুঃখেরা জমকালো...
তাই কান্না গিলে মিথ্যা বলাই ভালো।

*হঠাৎ বৃষ্টি নামে, একা একা ভিজে যায় চোখ
নীলচে শরীর থেকে খসে পড়ে ব্যথার পালক;
কাঁচ ভেঙে চুরমার। ভালবাসা ছটফট ক'রে
কিচ্ছু না বলে আজও মরে যায় ভেতরে ভেতরে।

*মানুষ মানুষ মানুষ
কত মানুষ চতুর্দিকে!
তবু ভালবাসার একই অভাববোধ

আমার ভাল্লাগেনা জানো,
তবু তোমাকে সামলানো-
যেন মরার আগেও একটু প্রতিরোধ

বান্ধবীমন- সৃজা ঘোষ

আলোর কাছে কে আর ঋণী? কে আমাদের মতন সোজা
জীবন মানে মুখোশ ঘেঁটে মানুষ কেবল মানুষ খোঁজা।

হঠাৎ কোন্ এক ফিকির থেকে, পেলাম যেন মনের মিলও
দুটো মানুষ হাঁটতে গিয়ে এ ওকে ঠিক সঙ্গে নিল!

মাটির কাছে বসল দুপুর, করল উপুড় ব্যথার খাতা
জীবন যদি উপন্যাস হয়, বন্ধু তবে শ্রেষ্ঠ পাতা।

যত্ন নিতে কি আর লাগে? দু একটা ফুল, অল্প হাসি
বোকার মতন কাঁদতে গিয়েও জড়িয়ে বলা- ভালই বাসি

বলার আগেই বোঝার নিয়ম, যেকটা মন ফেলল ধরে
তাদের কাছে শক্ত মানুষ জল হয়ে যায়, হাওয়ায় ওড়ে

ভয়ের ঘোরে কাঁপতে দেখে, কেউ দাঁড়ালে হাতের পাশে
সন্ধ্যে নামার একটু আগে পাথর চোখেও বৃষ্টি আসে

জীবন মানে নতুন কি আর? আজকে বাঁচা, কালকে মরা
আমার কাছে বন্ধু মানে এমনি দেখা, জড়িয়ে ধরা।

জানিনা আর কষ্ট কত? কি আমাদের ভাগ্যলিখন?
তোর সঙ্গে হাজার বিকেল কাটিয়ে দেব, বান্ধবীমন...

গ্রীষ্ম এসে মিললে শীতে বসন্ত হয়- সৃজা ঘোষ

প্রেমে পড়লে মেয়েদের বুকের ভেতর জুড়ে  শীত পড়ে। একটা জেদী শীতকাল... কেউ ভালবাসলে, ব্যথার গাছে পুরনো সব পাতা ঝরে যায়। তখন নতুন ব্যথা আসে, নানা রঙের ভয়ের ফুল চাষ হয় অভিমানের ওপরতলার ছাদে;
এমনিই জ্বর আসে, এমনিই রাগ হয়, বলতে না পারার রাগ
আর নতুন মানুষ সে রাগ না বুঝলে জেদ বাড়ে।
সারাদিন হাওয়া দেয়। ঠোঁট ফাটে। শিরশির করে ওঠা গা বুঝিয়ে দেয়- উষ্ণতা জরুরি। তবু মেয়েরা নিজে থেকে
সূর্যের খোঁজ করেনা। বরফে শেষ হয়ে গেলেও কোনো
উত্তাপ খোঁজে না নিজে নিজে। চুপ করে থাকে।
প্রেমে পড়লে ব্যথা নিয়ে, শীত নিয়ে চুপ করে থাকে ওরা।
কি ভয়ানক নিশ্চয়তায় বিশ্বাস করে সব কঠিন কাঁচ ভেদ
করে তার একটা নিজের রোদ ঠিক এসে পড়বে অসার গায়ে। ভাবে মৃত্যুর আগে সেই নতুন মানুষ চাদরের মত মুড়িয়ে দেবে সব, জড়িয়ে নেবে। কষ্ট হয়, প্রেমে পড়লে
কষ্ট হয় খুব। আগুনের অপেক্ষায় নিজের ভেতর আরও
বরফ বাড়িয়ে তোলে মেয়েরা। তারপর একটা সত্যিকারের
আগুন এসে জড়িয়ে নিলেই তার জল হবার পালা...
সে জলে দুটো মন সারাদিন স্নান করে। ভালবাসাবাসি হয়। আর ব্যথা থাকে না কোথাও৷ যত্নে ছাদ ভরে ওঠে ফুলে,
মৃত উপকূলে দুটো নদী মিলে যায়, এ ওকে ছাড়া পারে না।
কমলালেবুর, সূর্যমুখী, বোরোলিনে ভাগ বসানোর মানুষ
আসে। এই দুই গায়ে গায়ে, পায়ে পায়ে সারাদিন শাসনের কাঁটায় সোহাগের উল বোনা চলে। ভুলচুক শেষে সব
মানুষই একদিন বুঝতে পারে- একটা চাদরে দুজন ধরলে দুঃসহ শীতকালও আদুরে হয়ে যেতে পারে অনায়াসে।
বোঝা যায় বসন্ত আসন্ন। বোঝা যায় এবার নতুন পাতার দিন

প্রেমে পড়লে মেয়েদের বুকের ভেতর জুড়ে শীত পড়ে
আর পুরুষের সকল ছেয়ে যায় প্রখর গ্রীষ্মে।
আর তারপর গ্রীষ্ম এসে মিললে শীতে, বসন্ত হয়...

সৃজা ৬

যদি হুট করে চলে যেতে হয়, বলে যাব আজ কাকে?-
সব অভিমানী মেয়েদের বুকে একটা ফিনিক্স থাকে।
ভালবাসা পেলে, ছাই ভেঙে তারা উড়তে শিখবে ঠিক
শুধু কেউ এসে পাখিটার ঠোঁটে একটু সাহস দিক...

যদি যেতে হয় যাব, শুধু, কেউ এইটুকু বুঝে নিক-
ভালবাসা পেলে বাঁচতো মেয়েটা, বাঁচতে পারত ঠিক। 🙂

স্মৃতিতে আমাকে অন্তত ছেড়ো না'- সৃজা ঘোষ

আজ আর কিছুতে জুড়তে পারে না সাঁকো?
সাজাতে পারি না একটা উদযাপন?
তুমিও আমার মতনই দুঃখে থাকো?
মধ্যরাত্রে ভেজাও চোখের কোণ?
আমি একা থাকি, একা একা পথে ঘুরি
ব্যস্ত রাস্তা একা পার হই, ভয়ে
নীচে ফেলে এসে হাজার খানেক সিঁড়ি
ছাদ থেকে ঝুঁকে পড়ার ইচ্ছে হয়।
তোমার জন্যে চমক রাখা সে ছাদে
একবার গিয়ে দাঁড়িও সেখানে আজ
চোখ বুজে দেখো হাওয়াতেই আমি আছি
তারায় তারায় স্মৃতিদের কারুকাজ।
আজ সব আলো তোমার জন্যে রাখি
আমি নিশীথিনী, অন্ধকারের মেয়ে
তুমি এইটুকু জেনে রেখো আজীবন-
কাউকেই ভালবাসিনি তোমার চেয়ে।
চলে গেছ ফিরে দেখবে না বলে, জানি
আমিও কিচ্ছু বলিনি কাউকে আজও
এত জিজ্ঞাসা, এত বিস্ময় নিয়ে
তুমি তো আমারই বুকের মধ্যে আছো।
কি দেব তোমায়? কি দেব আজকে বলো?
কোন উপহার পৌঁছতে পারে কাছে!
তোমার জন্য ততটা জন্ম থাক,
আমার ভেতরে যতটা মৃত্যু আছে।
কত মোমবাতি বুকে পুড়ে যায় রোজই
তা থেকে আজকে কয়েকটা দিলে, নেবে?
ফেলে গেছ বলে অভিযোগ নেই কোনও
মিথ্যে করেই তোমার থাকতে দেবে?
কে বলে দেখি না? রোজই তো তোমায় দেখি-
সেই একইভাবে আমাকে জড়িয়ে রাখো
খুনসুটি বাড়ে আদরের মেহফিলে
মাঝেমধ্যেই ডাকনাম ধরে ডাকো।
আমি সংসার নিয়ে বসি প্রিয় ঘুমে
কোলকাতা গাঢ় হয়ে আসে ক্রমাগত
নিওন আলোর প্রতি কটা চুম্বনে
তোমাকেই দেখি হুবহু আগের মত
ওষুধে ওষুধে ছেয়ে গেল প্রিয় বাড়ি
কত অভ্যেসই পাল্টে ফেলতে হল!
তবুও তোমার যে কোনো অ-সুখী দিনে
জানি লাগবে না, তবুও লাগলে বোলো
অপেক্ষা শেষ হয় না এখনো কেন?
যেন আজও আছে ঘরে ফেরবার আশা
তোমার জন্যে কি দেব আজকে বোলো?
রইল বিষাদে বিদগ্ধা... ভালবাসা...
হয়ত পড়েই থাকবে এ উপহার-
প্রয়োজনহীন এইটুকু সোদবোদ
ছেড়ে দিতে হয়- এই বাস্তব জেনেও
রাখতে এলাম আজ শেষ অনুরোধ-
প্রতিটা স্বপ্নে, প্রতিটা যত্নে তোমায়
যেটুকু রেখেছি, সেই টুকু কেড়ো না
আমি একা আছি। একাই বাঁচব, শুধু
স্মৃতিতে আমাকে অন্তত ছেড়ো না।

অক্ষমতা- সৃজা ঘোষ

তুমি আমার থেকে অনেক দূরে থাকো
আমি রাতবিরেতে অসুখ নিয়ে শুই,
একা চাঁদ ভেঙে যায় অলস বিছানায়
তুমি আমার কথা জানো না কিচ্ছুই।

ভোরে মাথা তোলার জোরটুকু যায় চলে
তবু একটা তারা নিয়ম করে খুঁজি
আমি রাগ করি না, অসুখ বাঁধাই শুধু
ব্যথায় জলের আগেও চোখদুটোকে বুজি

আজও নিয়ম করে বন্ধুরা ভুল বোঝে
মুঠোয় আকাশ পাতাল রাখতে পারি জমা...
আমায় ছাড়ল যারা, মারল যারা ঘুমে,
আমি তাদের দাওয়ায় বিছিয়ে এলাম ক্ষমা।

এত হাওয়ার নিয়ম বাড়িয়ে দিল বেলা
কোনো চিঠির খবর পাখিরা আনল না
শেষে ছাড়ল শরীর মায়ের কাছে এসে
আমার জ্বরটুকু আর পারদে মানল না!

শুধু লাল হল চোখ অভিমানের রঙে
আমার খবর শুনে কাঁদল ছাদের ফুল;
কোনো ফোন এলো না যন্ত্রণা ভেদ করে
সারাজীবন ধরে বুঝল সবাই ভুল

তাই ভেতর থেকে বন্ধ এ দরজাটি
আর খুলবে না মন তেমন টোকা ছাড়া
আমি থাকলে তো নিঃশব্দে জুড়ে রাখি
তাই যাবার সময় কষ্ট পাবে তারা।

নিজের থেকে কিচ্ছু বলি না আর
যা ইচ্ছে তাই তুমিও তো নাও ধরে!
তোমার এত মেঘের অহংকারে
আজও আমার ব্যথার চাতক ওড়ে

পাখির আওয়াজ কানের কাছে আসে
ওরা ঝাপটে ডানা আনন্দ গান গায়
তুমি আমার না হোক, পাখির কথা শুনো-
ভালবাসতে গোটা জীবন কেটে যা য়

সবাই যদি ধূমকেতু হয়, তবে
জানলা ঘেঁষে চাঁদ হবে কে বলো?
ফোন আসেনা, ঘুম আসে না কাছে
তুমিও কেমন আলগা হয়ে চলো...

সারা জীবন লোকের যত্ন নেওয়া মানুষ
বুঝি- শেষ অসুখেও পায় না উপশম!
আজ সত্যি আমার একফোঁটা রাগ নেই
শুধু অসুখ ভীষণ। সময়? আরও কম

আমি সেইটুকুও বোঝাতে অক্ষম-
চোখে অসুখ, হাতে সময় বড় কম।

তোমার করণীয় যা - সৃজা ঘোষ

অনেকগুলো যন্ত্রণাকে এক করেছি আমি
ভেতর থেকে দরজা দেওয়া এই এতকাল ধরে
হলুদ আলোর নীচে আমায় জড়িয়ে নিও তুমি
বুঝিয়ে দিও- মানুষ আজও আদর পেলে পোড়ে।

হলুদ আলোর নীচে আমায় অবুঝ করে নিও
পায়ের কাছে আকাশ দিও, মাথার দিকে মাটি
পাথর চোখে হঠাৎ যদি জল এসে যায় প্রিয়
বুঝবে মুখে মিথ্যে ছিল, দৃষ্টি পরিপাটি।

আমার ইতিহাসের পাতায় ধ্বংসাবশেষ, ক্ষত
অনেকগুলো দুর্ঘটনায় আশঙ্কা আর ভীতি...
কিন্তু তুমি হাত ছোঁয়াতেইই কেমন করে যেন
যত্নে আমার দুঃখ হল অশ্বক্ষুরাকৃতি!

নরম যত প্রেম ছিল সব বিক্রি হতে হতে
তখন আমি হাঁটতে জানি মৃত্যুভয়ও ফেলে
এক্কেবারে ভুলেই গেছি ছাইতে আগুন চাপা
আচমকা তাই টান বুঝিনি যখন তুমি এলে...

শাসন এসে রাতবিরেতে চাদর দিল জ্বরে
ঘুমের ভেতর স্পর্শে জেগে উঠল গোটা পাড়া
কি এক লোভে আমায় সবাই কষ্ট দিত শুধু
এই তো প্রথম একটা ডাকেই পেলাম কারোর সাড়া

মুখের দিকে তাকিয়ে ছিলে, আমিই অবিশ্বাসী।
ভেবেছিলাম সবাই একই- স্বার্থপূরণ হলে,
দিব্যি প্রিয়তমার বুকে আগুন জ্বেলে দিয়ে
নিরুত্তাপের সাগর নিয়ে সে ঠিক যাবেই চলে

তাই শুনিনি, এড়িয়ে গেছি। শুধু আড়াল থেকে
তোমার দিকে গান ছুঁড়েছি এমন অভিমান
বন্ধ চোখে অনেকটা তো এগিয়ে এলাম আমি
এবার তুমি বোঝাও ভালবাসার পরিমাণ

সামনে এসে দাঁড়াও এবার, ফলাও অধিকার
সোহাগ জড়াও এমন যেন কাঁদতে গিয়েও হাসি
আমাদের এই দারুণ প্রেমে বেঁচে উঠুক সব
কাঁটায় মোড়া প্রাচীর ভেঙে আসুক পরবাসী।

হলুদ আলোর নীচেই আমায় প্রমাণ করো ভুল
নরম কোনো শাস্তি ছুঁইয়ে চুপ করিয়ে নাও...
ব্যথায় তোমায় ফিরিয়ে দিয়ে ভুল করেছি আমি
এবার এসো- এক আদরে সহজ করে দাও।
-
-দ্বিতীয় কাব্যগ্রন্থ (আদরে সহজ করে দাও)

সৃজা ৫

অনেক হেঁটেছি প্রেমহীন রাস্তাতে
এবার গোলাপ নিয়ে এসো
কাঁটা যে সোহাগী হয়, এ কথা বলে না কেউ
তুমি তা বুঝিয়ে ভালবেসো।

নাহয় রক্তপাত, নাহয় ব্যথাও কিছু
তবু তো অহংকারে লালই
হবার থাকলে এই বার শুধু প্রেম হোক
বিবাদ তো হয়েছিল কালই!

গতজন্মের কোনো সুখী বিফলতা থেকে
আমাদের কুঁড়ি ফুটে যায়
তোমার শোবার ঘরে আমাকে সঙ্গে নিও
মনে রেখো সব রাস্তায়...

আজও ভালবাসলেই বিচ্ছিরি জন্মটা
নিমেষে গোলাপ হয়ে যায়!

জ্বর- সৃজা ঘোষ

জ্বরকে চিরকালই আমার কেমন যেন এক মায়াবী অসুখ মনে হয়। পারদে পারদে জানান দিয়ে সে আসে অনতিবিলম্বে। আতিশয্যে নয়, গোপনে যেভাবে আসে প্রেম, যেভাবে আসে মরণ, যেভাবে আসে অভিমান...  কাঁচের মধ্যে দিয়ে স্পষ্ট ফুটে ওঠে আগমনী৷ জ্বরের খবরে প্রিয়জনের মুখ ভার হয়, ফুরফুরে মেয়ে জ্বরে পটে থম মেরে যায়, এতকালের লুকিয়ে রাখা ব্যথা যা করতে পারেনি, জ্বর তা অনায়াসে পারে। আমি কাঁদিনা অথচ চোখ ছলছল করে! চোখ বন্ধ করতে পারি সহজে অথচ ঘুমোতে ইচ্ছে করে না! খেতে ইচ্ছে করে না! শুধু রাগ করতে ইচ্ছে হয়। তখন ভেতরে শীত, বাইরে আগুন গা। তখন বলে দিলেই ভাল, কিন্তু বলতে পারছি না। জ্বর আসে। যাদের ছোঁয়ার অধিকার নেই, তারা কতকিছু ভাবে আর যারা অনায়াস জোর খাটানোর মত আপন, তারা খালি কাজের ফাঁকে গাল কপাল ঘাড় ছুঁয়ে ছুঁয়ে দেখে। গম্ভীর মুখে বলে ওঠে- ' মনে হচ্ছে ভোগাবে'। জ্বর এলে কেউ ছেড়ে যায় না, থার্মোমিটার নিয়ে আসে, গায়ে চাদর টেনে দেয়, সব আব্দার তখন আপনিই মঞ্জুর হয়ে যায়। প্রিয় বন্ধু বান্ধব ফোনে লেগে থাকতে চায়, আর যাদের জীবনে বিশেষ সংজ্ঞাহীন কেউ থাকে তারা নাকি বকে, অন্যদিনের চেয়ে কিছু বেশি ক্ষণ থাকে! তারা নাকি গান শোনায়! আগুন গা জড়িয়ে ধরে রূপকথার গল্প শুনিয়ে ঘুম পাড়ায়- জ্বরের আগুনে ঝাঁপ দিয়ে রাজপুত্তুর তুলে আনে এ পৃথিবীর সবচাইতে শীতল মাটি। সে মাটি রাজকন্যার জ্বোরো গায়ে লেপে দিলে তবে জ্বর সারে। পোড়া গা মন ঠান্ডা হয়। পায়ের পাতায় সাড় আসে।
জ্বরকে চিরকালই আমার খুব নরম বিষাদ মনে হয়। তার রঙে নীল, তার ঢঙে ছেলেমানুষী, পরণে অহংকার। তার আসায় যাওয়ায় কমায় বাড়ায় কারোর জেহাদ খাটে না, কেবল আদর খাটে।  তাই জ্বর এলে মাথা ধুইয়ে দিতে হয়, ভাত খাইয়ে দিতে হয়, মাঝে মাঝেই কানের কাছে মুখ নিয়ে এসে যতটা সম্ভব নরম করে বলতে হয়- 'এই তো আছি', হাতের পাতায় পায়ের পাতায় ওম দিতে হয়, আড়ালে খোঁজ নিয়ে যেতে হয়, সে ঘুমিয়ে পড়লে সারারাত জেগে জেগে উঠে দেখতে হয়- জ্বর বাড়ল কিনা। জ্বর আসলে একরকম মদ। নেশা ধরায়৷ এ সময় বেশি বলতে ইচ্ছে করে না, কেউ গল্প শোনালে বেশ ভাললাগে। মেরে দিতে নয়, মরে যেতে ইচ্ছে করে।  ঘ্যানঘ্যান গুলোকে প্রশ্রয় দেবার কেউ থাকলে সেরে উঠতে ইচ্ছে করে। কষ্ট হলে চুপ করে থাকতে ইচ্ছে করে।  গল্প থামলে রাগ হয়, গান থামলে আরও। কেউ চলে যেতে চাইলেই চাদর সরিয়ে ফেলতে ইচ্ছে করে। কেউ কাছে না থাকলেই ঠান্ডা জলে স্নান করে একটা বিপর্যয় ঘটাতে ইচ্ছে করে। তারপর জ্বর বাড়লে কিছু মনে থাকেনা। জ্বর সারলে তাকিয়ে দেখি মশারির মধ্যে রোদ ঢুকেছে। কেউ যেন হাত বুলিয়ে দিচ্ছে মাথায়, কেউ যেন বলছে- 'যাক বাবা, এবারের মত রক্ষে! '

জ্বর রক্ষে পায় না। সে হাওয়ায় হাওয়ায় থাকে। মাঝে মাঝে ফুরফুরে মেয়েদের গায়ে এসে বসে প্রজাপতির মত। প্রথমে গা ছ্যাক ছ্যাক করে, তারপর সে আসে সমারোহে। জ্বর এলে ক্লান্তিতে, ছেলেমানুষীতে মানুষকে আরও হাজারগুণ সুন্দর দেখায়। কি এক আলো নরম করে দেয় তার সমস্ত সামলে চলা। উষ্ণ চোখে ফুটে ওঠে অসুখে মোহময়ী এক  ঐতিহ্যবাহী ব্রহ্মকমল৷

তার অমন পাগল করা রূপ ভোলা যায় না। জ্বর হলে সরে যাওয়া নিয়ম। সবাই হাত রাখেনা কপালে। আর যারা ছোঁয়, যারা হাত রাখে, সাথে নিয়ে বাড়ি ফেরায়, ঘন্টায় ঘন্টায় খোঁজ নেয় থার্মোমিটার কি রিড দিচ্ছে, তারা পরবর্তী সবকটা জ্বরের অধ্যায়ে অসুখ সামলাতে আজীবনের মত থেকে যায়...

সবার সাথে জ্বর ভাগ করা যায় না। কারোর কারোর সাথে যায়। মা বাবার পর আমরা মেয়েরা সারাজীবন ধরে বোধহয় এই জ্বর ভাগ করার মানুষই খুজি।  🙂

চিঠি - সৃজা ঘোষ

তোমাকে প্রেম,

অথচ তুমি এলে ভাল হবে। আমার দোতলার ঘরটা এবার নতুন করে সাজাবো। লেখার জায়গায় ফ্লাওয়ার ভাস, কর্নার টেবিলে একটা হলুদ আলোর ল্যাম্পশেড, সোকেশে একটা সুগন্ধী মোম। প্রিয় জানলাগুলোর জন্য নতুন পর্দা কিনব। হাওয়ায় ওড়া, অবাধ্য, রঙীন ফুল আঁকা পর্দা... সারাদিন উড়বে সে। আমি বুঝব নতুন হাওয়া এলো আমার জন্যে...

তুমি এলে বাবার সেই কবেকার দেওয়া খালি পড়ে থাকা ডায়েরিটা সদ্য কিশোরীর মত ভরিয়ে ফেলব। একটা নতুন নিব পেন চাই কিন্তু। কাউকে ধরতেই দেব না আমার ডায়েরি। ভেতরের পাতায় যা ইচ্ছে, পেছনের পাতায় লুকোনো কাটাকুটি। আর ওপরে? গোটা গোটা হরফে লিখব 'গোপন'। শব্দটাকে ঘিরে দুটো জড়িয়ে যাওয়া লতা আঁকব...

ঠিক সময় ঘুমোবো তুমি এলে। অন্ধকার আমাকে মুখ ভেঙানোর আগেই আমি অন্ধকারকে ভেংচি কাটব। তোমার সাথে কথার ফাঁকে কখন চোখ লেগে আসবে, নিজেই জানব না। ঘুমের মধ্যে থেকে থেকে কেঁপে উঠবে না একজন। কেন বলোতো? তখন যে ভয়ের কিচ্ছু থাকবে না, ভোলার কিচ্ছু থাকবে না... লক্ষ্মী মেয়ে কাকে বলে জানো? ঠিক তেমন হবো আমি।

তুমি এলে অল্প সাজব। টিপ, দুল পরি না বলে আর শুনতে হবে না মায়ের বকাবকি। যে মেয়েটা সাজ বলতে শুধু ডার্কসার্কেল সামলানো কাজল বোঝে, সে হুট করে একদিন প্রজাপতি হয়ে যাবে তুমি এলে। সব্বাই হাঁ হয়ে যাবে কিন্তু!

তুমি এলে গানটা নিয়ে বসব, বুঝলে? বাড়ির লোকের আর আফসোস থাকবে না ভাল গলাটা নষ্ট করছি বলে। গীতবিতান তো কাছেই থাকে, শুধু গান দেবার মত মানুষ থাকে না। যদি আসো, তখন তুমিই আমার ঘুম ভাঙানিয়া, তুমিই দুঃখজাগানিয়া। আর এইবার গোটা বাড়িতে সুর ঘুরে বেড়াবে পায়ে পায়ে। তবু আমার হিয়া বিরাম পায় না যে!

যা যা কিছু পারি অথচ অভিমানে করিনি এতদিন, সেসব করব এইবার। ঠিক সময়ে বাড়ি ফিরব। এখানে ওখানে ঘুরে বেড়ানোর প্রয়োজনই হবে না। আর আমার কোলকাতা অবসেশন? সেও নাহয় তোমার সঙ্গেই হবে। ছুটি হলে ঘাট... নৌকো... হাওয়াই মিঠাই... হলুদ ট্যাক্সি... শীতে বইমেলা... মৌড়ি লজেন্স...মিউজিয়াম... ফাঁকা রাস্তা... আইসক্রিম... বাংলা সিনেমা... কফিশপ... তুমি এলে, এ শহরের যা যা কিছু আমার একার, সব আধাআধি হবে কেমন? আচ্ছা... আধাআধি না, তোমায় একটু বেশিই দেব। ভালবাসলে ভাগ করতে নেই। যা তোমার তাই আমার।

তুমি এলে এবার একটা গান আর একটা গল্প লিখব। প্রেমের। পাঠক চায় খুব, আমিই এতকাল পারিনি প্রেমের অভাবে। এবার সত্যি লিখব। লিখেই তোমায় পড়াবো, তারপর ছড়িয়ে দেব। কপিরাইট রাখবনা। আমি চাই এ শহরে প্রেমের গান আর প্রেমের মানুষ বারবার চুরি যাক

এই যাহ! কাজের কথাই বলা হল না যে! বসন্ত নিয়ে একটা ফিরিস্তি আছে কিন্তু। শুনে নাও- তুঁতে, হলুদ, গোলাপী আর সিঁদুরে লাল এই চার রঙের আবীর। মনে থাকবে? তুঁতে, হলুদ, গোলাপি আর লাল। ফাল্গুন মাস পড়লেই চাই। না,  মোটেই ছেলেমানুষি না। আমার কি দোষ? বসন্তে জন্মানো মেয়ে যে... রাধিকার হোরি নইলে চলে কখনো? অতএব, ফুল ফুটুক না ফুটুক, সেদিন বসন্ত হবে।

তুমি এলে বারোমাস প্রতিবাদ... বারোমাস প্রেম...বারোমাস অঞ্জন সুমন রূপম... একসাথে মিছিলে যাব। দেশ শহর গ্রাম সব তো এক। কোথাও অন্যায় দেখলেই, ধরে থাকা হাতদুটো নিমেষে ব্যারিকেড। প্রতিরোধ সেরে শেষ বাসে বাড়ি ফিরব কাঁধে মাথা রেখে। বাবা বলে অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়ানো মানুষ ভাল হয়। তুমিও বাবার মত ভাল হবে। হবে তো?

তুমি এলে ইচ্ছের ছুটিতে তোমার পাহাড়। আর দুঃখে, আমার সমুদ্র। রাগ করলে কপালে সেই বিশেষ স্নেহ আর ভাত খাইয়ে দিলেই চলে কিন্তু তাতেও যদি কাজ না হয়, কোনো কারণে যদি কথা বন্ধ, যদি অভিমান, যদি অসুখ, যদি বিরহ... তবে কিন্তু ছুটি নিয়ে সোজা জঙ্গল- কথা হয়েই রইল। ওখানে রাত নামবে আর দেখবে আমাদের মধ্যে ঠিক হয়ে যাবে আবার সব।

ব্যাস। এটুকুই। একে সুখ বলে সুখ, ঝক্কি বললে ঝক্কি। তুমি এলে এসব সুখ হবে, এসব ঝক্কি হবে। তুমি না এলে এসবের কিচ্ছু হবে না। সহজ হিসেব। তখন আর কি? এই জীবন এই জীবনই রইল। আমি তোমায় পেলাম না আর তুমি পেলেনা এমন একজনকে, যে ছুঁয়ে দিলে সবকিছু ভালবাসা হয়ে যেতে পারত রাতারাতি। তুমি এলে সেসব প্রিয় হবে, না এলে নয়। তখন তোমার না আসা কবিতায় সবাই পড়বে, তোমার না আসার গল্প আমার লেখা হয়ে বিক্রি হবে কলেজস্ট্রিটে। মেটাফর বুঝলে, হুঁ হুঁ, সব কেমন মেটাফর হয়ে যায়...

আমার দোতলার ঘরটা একরকমই থাকবে। ভারি পর্দাটা সরাবে না কোনো হাওয়া। আমার নীল আলো কখনো হলুদ হবেনা আর। আমার ডায়েরি নিয়ে প্রকাশক আর দু একটা বন্ধু ছাড়া কারো কোনও কৌতুহল থাকবেনা। সবাই মিলে আমার সব ডায়েরিকে একদিন বই বলে ছাপিয়ে বার করে দেবে। বইমেলায় বিক্রি হবে সেইসব তোমার অজান্তেই। কোনোদিন কোনো ম্যাগাজিনে এক ছদ্মনামীর লেখা পড়ে হয়ত চমকে উঠবে তুমি! তোমার চেনা চেনা লাগবে সব। হয়ত তোমার আফসোস হবে কিম্বা কিচ্ছু হবেনা। তবে আমার কিন্তু নাম হবে আরও... লোকে সমীহ করবে। শুধু মায়ের কাছে খাওয়ায় ঘুমোনোয় নিজের খেয়াল রাখায় আমার আর এজম্মে লক্ষ্মী মেয়ে হওয়া হবে না।

বয়স বাড়বে। কাজ বাড়বে। একটা বয়সের পর হয় নিয়মিত ঘুমের ওষুধ লাগবে নয়ত দুঃস্বপ্ন সওয়ার জোর। কাজল ছাড়া আর কিচ্ছু থাকবেনা আমার সাজবাক্সে। প্রতিবাদে আর ব্যারিকেড নয় থাকবে ভেতরে ক্লান্ত আর বাইরে শক্ত একটা মুঠো। তোমার ওপর নাকি নিজের ওপর রাগ করে একটা গানও গোটা গাওয়া হবে না আর কোনোদিন। স্নানের ঘর জানবে শুধু প্রেমের গানে, প্রেমের লেখায় আসলে আমি একটা ভাসা ভাসা মুখ খুঁজি। তুমি না এলে আমার কোলকাতা গোটাটা আমারই থাকবে। আমার ছোট ছোট চোখে, মুঠোয় একটা গোটা শহর উপচে পড়বে অথচ তাকে ভাগ করে নেবার মত কেউ থাকবেনা।

তুমি, প্রেম, তুমি না এলে আমার সমস্ত ফাল্গুন শুধু রঙ জমিয়েই কাটবে, সে রঙ ছোঁয়ানো হবে না আর কাউকে। আমি পাহাড় থেকে ছুটি শেষ হবার আগেই ফিরে পড়ব, সমুদ্রে ডুবব তবু দুঃখ ধুয়ে যাবে না কিছুতেই। অভিমান করে লাভ হবে না জেনেও সেদিন যদি কিছু ছেলেমানুষী অভিমান করে ফেলি একাই জঙ্গলে যাব। ওখানে রাত বাড়বে আর আমার গায়ে জ্বর... এই যেমন এখন। লোকে বলবে অসুখ। আমি জানব- অপ্রেম। লোকে বলবে- পাগলামি। আমি জানব- অপেক্ষা।

আসলে- তুমি না এলে অনেক কিছু হবে, তুমি না এলে বহু কিছু হবেনা। তবে যাই হোক। আমি কিন্তু বাঁচতে চাই। এই শহরটার মত... পাওয়া, না পাওয়ার সব ক্যাকাফনি গায়ে জড়িয়ে বাঁচতে চাই। মরতে তো আমাদের সবাইকেই হবে একদিন! ওতে আর নতুন কি বাহাদুরি ? শুধু  তুমি এলে আনন্দের বিষে মরব আর না এলে- বিষাদের অমৃতে। তফাত বলতে তো এটুকুই...

ইতি,
আর কে? একটা হতচ্ছাড়া, একটা আধপাগল কিন্তু কোত্থেকে যেন এই বয়সেই ভালবাসার আসল মানেটা ধরে ফেলা এক আস্ত পাকাবুড়ি 😊